অনুস্বরং (রম্যগল্প) | প্রকাশ চন্দ্র রায়

 অনুস্বরং (রম্যগল্প) 
প্রকাশ চন্দ্র রায় 

.


বড় জামাই মর্যাদাবান ব্যক্তি,ধনী,

শিক্ষিত,চাকুরীজীবি ও মিষ্টভাষী বিধায় নানা ঢঙের গল্প বলতেও পটুসে। শ্বশুর বাড়ীতে তাই তার কদর একটু বেশী। বিশেষ করে ছোট্ট শালী টুম্পা,বড় জামাই অন্তঃপ্রাণ,কাছে পেলেই গল্প বলার আব্দার করে । জামাইও শুরু করে দেয় নানা ভাষার নানা ঢঙের চটুল গল্প । ছোট জামাই স্বল্প শিক্ষিত কৃষক,শালা,শালীদের মনোরঞ্জনে একদম অপটু সে । শুধুমাত্র তার শ্বাশুরীমাতা'ই একটু বেশি সহাভূতিশীল ছোট জামাইর জন্য। এসব কারনে শ্বশুরালয়ে আসতেই চায় না সে,বিশেষ করে বড় জামাই উপস্থিত থাকলে কোনক্রমেই সে শ্বশুরবাড়ী মুখো হতে চায় না । বাড়ীর খাসীটা জবাই হয়েছে,মা বললেন,এ্যাই মেয়েরা শুধু ছোট জামাইকে নিমন্ত্রণ করো, এক্ষুণি আসতে বলো তাকে । খবরদার বড় জামাইকে বলো না,ওকে আগামীকাল দাওয়াত খাওয়াবো । পিচ্চি টুম্পা চুপ করে দুই জামাইকেই অতিশীঘ্র তাঁদর বাড়িতে আসার জন্য কল করে দিলো । ছোট জামাইকে বললো যে, বড় জামাই ঢাকায় গেছেন,আজকে আসবেন না । ছোট জামাই,নাচতে নাচতে চলে এসো শ্বশুর বাড়ীতে । ঘরে ঢুকে কেবল বসেছে সে খাটের উপরে আর তখনি মোটর সাইকেলের শব্দ শুনে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখে বড় জামাইও এসে গেছে ।

এমতাবস্থায় রাগে ক্ষোভে লজ্জায় দিশেহারা ছোট জামাই,লুকিয়ে পড়লো খাটের নীচে । বড় জামাইকে পেয়ে হৈ হৈ করে উঠলো শালা শালীরা । পিচ্চি শালী টুম্পা হাত ধরে টেনে নিয়ে গিয়ে বসালো সেই খাটে,যার নিচে লুকিয়ে আছে ছোট জামাই । যথারীতি শুরু হলো গল্প,আজকের গল্প সংস্কৃত ভাষার । গল্পের মাঝামাঝি পর্যন্ত শুনে ছোট জামাই বুঝে ফেললো যে সংস্কৃত ভাষায় প্রতিটি শব্দের শেষে অনুস্বর যুক্ত থাকে । আনন্দে আপ্লুত হয়ে গেল ছোট জামাই,অনেকটা সাহসীও হয়ে উঠলো,স্বগতোক্তি করলো সে মনে মনে,আঃ ! সংস্কৃত ভাষায় গল্প বলা তো ভীষণ সোজা ! তৎক্ষণাত খাটের নীচ থেকে বেরোতে বেরোতে বলতে লাগলো সে- অনুস্বরং দিলেং যদিং সংস্কৃতং হয়ং,,তবেং কেনং ছোটং জামাইং খাটেরং তলেং রয়ং । (সমাপ্ত ) ১৩,০৮,২০২০ বৃহষ্পতিবার ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.