অবাক দর্শন
প্রকাশ চন্দ্র রায়
০৭,০২,২০২১অসিতের মামা'র বাড়ীতে প্রবেশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই
হৈ হৈ করে উঠলো সবাই,তারপর ঘিরে ফেলল অসিতকে।
সবার হাতেই নানারকম রঙের পাত্র। আজকে যে হোলির দিন সেকথা একদমই খেয়াল ছিল না শহরবাসী অরিন্দমের।
শহরে এসব পূজা-পার্বণ নিয়ে বিশেষ একটা মাথা ঘামায় না কেউ। মেসমেট অসিতের জেদে পড়ে গতকাল বিকেলে অসিতদের গ্রামে বেড়াতে এসেছে সে, আজ বিকেলে আবার বেড়াতে এলো এ গ্রামে,কিন্ত একি কাণ্ড!
আবাল বৃদ্ধ বণিতা সবাই যে রঙ মাখাচ্ছে অসিতকে! বারান্দায় দাঁড়িয়ে অবাক দৃষ্টিতে দেখছে আর ভাবছে অরিন্দম।
হায়! এখন পর্যন্ত কেউই তো খবর করছে না তার! এমনকি বসবার জন্য একখানা আসন পর্যন্ত এগিয়ে দিচ্ছে না কেউ।
হঠাৎ করে খেয়াল করলো সে,অসিত একটা মেয়ের কানে কানে কী কী যেন বলছে আর আঙুল তাক করে তাকেই দেখিয়ে দিচ্ছে।
মুহূর্তের মধ্যেই তড়িৎবেগে ছুটে আসতে লাগলো জনা-চারেক ছেলে-মেয়ে,উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই অরিন্দমকে হোলির রঙে রাঙিয়ে দেয়া।
ব্যাপারটা বুঝতে পেরে হতচকিত হয়ে পড়লো অরিন্দম,কী করবে এখন সে,গায়ে যে তার ধোপদোরস্ত পোষাক-পরিচ্ছদ! দু-এক প্রস্থ রঙ লাগলে সাড়ে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
আগুপিছু কিছু না ভেবেই বারান্দা সংলগ্ন ঘরটাতে ঢুকতে চেষ্টা করলো দিশেহারা অরিন্দম।
ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস!
ছুটে গিয়ে ঘরের কপাটে ধাক্কা মারলো সে আর বুঝলো যে, দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ। উপর্যুপরি ধাক্কাধাক্কির পরে কে একজন খুলে দিল দরজার কপাট-দুপাট।
ঘরে ঢুকতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো অরিন্দম,আলুথালু বেশে কে একজন সুন্দরী যুবতী হতবাক হয়ে দেখছে তাকে।
পিছনের রঙিন আক্রমনের ভয়কে ভুলে গিয়ে অপার বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে দেখছে অরিন্দম--কে এটা! নারী নাকি অপ্সরী!
পিছন থেকে কে যেন বলে উঠলো,
- কীরে অনিমা! তোর অসুস্থ শরীর সুস্থ হয়ে গেল নাকি রে? আয়, রঙ খেলবি আয়।
আগত প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে কেবল তাকিয়েই থাকলো অনিমা সুদর্শন অরিন্দমের দিকে।★
০৭,০৪,২০২১ বুধবার।